সেলফি তোলা নিয়ে কিশোরদের মধ্যে মারামারি হয়। পরে এটাকে কেন্দ্র করে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের চার গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিনজনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত ১৫ জনকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে আলগী ইউনিয়নের কুমার নদের সুলিনা ব্রিজের উপর নাওরা গ্রামের কয়েকজন কিশোর দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিল। এ সময় একই ইউনিয়নের গুণপালদী গ্রামের এক কিশোরের মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাদের।
এ সময় দুই গ্রামের কিশোরদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক ও হাতাহাতি হয়। এর কিছুক্ষণ পরে গুণপালদী গ্রামের কয়েক কিশোর সুলিনা বাজারে গেলে নাওরা গ্রামের কিশোররা তাদের মারধর করে। এর পরেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীরা আরো জানায়, কুমার নদ আলগী ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত। এর পূর্ব দিকে আলগী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের গুণপালদী গ্রাম। নদীর পশ্চিম দিকে আলগী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের নাওরা গ্রাম। সংঘর্ষে এক পক্ষে গুণপালদী গ্রাম ও অপর পক্ষে নাওরা, অপরপট্টি, শুয়াদী, চান্দ্রা গ্রামের বাসীন্দারা অংশ নেয়। ঢাল, সড়কি, রামদা, ইনপাটকেলসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তারা।
আলগী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মজিবর মুন্সী বলেন, মোটরসাইকেলে সেলফি তোলা এক কিশোরের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। পরে বড় সংঘর্ষ হয়।
আলগী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য বাকলেচ হরকরা বলেন, আমি এলাকার বাইরে আছি। শুনেছি সেলফি তোলা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে চার গ্রামের লোক এক হয়ে আমার ওয়ার্ডের গুণপালদী গ্রামের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, আহত ১৮ জনকে শুক্রবার রাতে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত গুণপালদী গ্রামের মাজেদ মোল্লার পুত্র ওবায়দুল মোল্লা (৪৬), অপরপট্টি গ্রামের আ. রহমান মাতুব্বরের পুত্র আসাদ মাতুব্বর (২২), নাওরা গ্রামের হাসেম মাতুব্বরের পুত্র আজিজুল মাতুব্বরকে (৪৫) গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহত ১৫ জন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।